বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম - মাখন খাওয়ার উপকারিতা
ভূমিকা
মাখন কম বেশি আমরা সবাই খাই। মাখন যেহেতু একটি দুধ জাতীয় খাদ্য, তাই বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও মাখন অনেকটা উপকারী। আপনার বাচ্চাকে মাখন খাওয়াতে পারবেন কিনা বা মাখন খাওয়ানো কতটা উপকারী,এর অপকারিতা আছে কি না! আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা এই পোস্টে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা বিস্তারিত আলোচনায় চলে যাই।
মাখনের পুষ্টিগুণ
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাদের সকালের নাস্তা যদি মাখন না থাকে তাহলে তাদের নাস্তাটাই যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কিছু পরিমাণ মাখন রাখা উচিত। এবং মাখন হৃদরোগের জন্যও অনেক উপকারী। বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা এগুলোর সাথেও আমরা এখন জেনে নিবো মাখনের কিছু পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। মাখনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ বিদ্যমান।
যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ভিটামিন ডি, লরিক অ্যাসিড ও সেলেনিয়াম এই পুষ্টিগুলো বাচ্চাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বাটারে রয়েছে প্রোটিন ১৬.৮ গ্রাম, ক্যালরি ৭১৭, ফ্যাট ৩.৩ গ্রাম। বাটারের মধ্যে যে লরিক অ্যাসিড রয়েছে তা বাচ্চাদের ক্যান্ডিডের এবং বাচ্চাদের ছত্রাকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
মাখন খাওয়ার উপকারিতা
মাখন পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। আমরা সবাই কম বেশি মাখন খেয়ে থাকি। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা মাখন খান ঠিকই কিন্তু মাখন এর যে অনেক উপকারিতা রয়েছে সেই সম্পর্কে জানেন না।
তারা অবশ্যই আমাদের বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা এই পুরো পোস্টটি পড়লে মাখনের বিস্তারিত তথ্যের মধ্যে মাখনের উপকারিতা সম্পর্কেও জানতে পারবেন। এবার চলুন জেনে আসি, মাখনের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
- খাবার পরিপাকে সাহায্য করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- শরীরে থাকা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
- হজম শক্তি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- মুখের অরুচি ভাব দূর করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- বাতের ও দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- চুলের সিল্কি ভাব ফুটিয়ে তুলে, চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
- শরীরের ত্বক ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।
- শরীরের হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- মাখনে বিটা ক্যারোটিন থাকার ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশ কমে যায়।
- মাখনের মধ্যে ভিটামিন ই থাকার ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং সূর্যের আলো থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
- মাখনের মধ্যে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা একটি শিশুর শারীরিক বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।
- মাখন যেহেতু দুধ জাতীয় খাবার, তাই এটি শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে ও শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
মাখনের অপকারিতা
সব কিছুরই যেমন পজিটিভ দিক রয়েছে তেমনি নেগেটিভ কিছুও থাকে। ঠিক তেমনি বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা এই পোস্টে যেমন মাখনের উপকারিতা রয়েছে, তেমনি মাখন এর কিছু অপকারিতা সম্পর্কেও তুলে ধরা হয়েছে।
উপকারিতা ও অপকারিতা সব দিক ভালোভাবে জেনেই আপনি আপনার বাচ্চাকে সঠিক খাবার খাওয়াবেন। তারপরও মনে কোন দুশ্চিন্তা থেকে থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। এবার চলুন আমরা মাখনের কিছু অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।
- যেমন অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় তেমনি অতিরিক্ত মাখন খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
- অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে, তবে সবার ক্ষেত্রে নয়। যাদের সবকিছুতেই কমবেশি অ্যালার্জি জনিত সমস্যা থাকে তাদের ক্ষেত্রে।
- মাখনের উচ্চমাত্রায় থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। যার ফলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে পারে।
- শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় চর্বি বৃদ্ধি পেতে পারে ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মেদ জমা হতে পারে।
বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম
যারা সদ্য নতুন মা হয়েছেন তারা অনেকেই মনে করেন যে বাচ্চাকে মাখন খাওয়ানো একদমই স্বাস্থ্যকর নয়। এটা ঠিক নয়। বাচ্চাদের শরীরের জন্য মাখন অনেকটা উপকারী। এবং বাচ্চাদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত। বাচ্চাদের যখন শরীর বাড়ার বয়স তখন যদি বাচ্চাদের শরীরে পুষ্টিকর খাবার না যায়। তাহলে সেই বাচ্চা যথেষ্ট সুস্বাস্থ্যকর এবং বুদ্ধিমত্তা কি করে হবে!
বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের দিকে এবং বাচ্চাদের প্রতিদিনের খাবারের দিকে নজর তাকে মায়েদের। মায়েরাই বেশি চিন্তিত তাকে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে। এবারে রয়েছে বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা।
এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সল্ট বাটার বা মাখন খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। এবং এক বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আমলের যে বাটার গুলো পাওয়া যায় এই বাটার গুলো দিতে পারেন। এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অল্প অল্প পরিমাণে খাবারের সাথে মাখন যোগ করে দিবেন।
এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এক চামচ বা এক চামচের কিছু কম মাখন দিতে পারেন। এবং এক বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ২ চামচ বা তার চেয়ে কিছু কম দিতে পারেন। এবং অবশ্যই যে বাচ্চাদের ওজন বেশি তাদের বাটার বা মাখন খাওয়ানোর ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াবেন।
যেকোনো বাচ্চাকে বেশি পরিমাণে মাখন খাওয়ানো উচিত হবে না। এতে শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। অনেক বাচ্চারা আছে মাখন খেতে চায় না বা মাখন পছন্দ করে না। তাদের ক্ষেত্রে তাদের খাবারের সাথে মাখন যোগ করে খাওয়াতে পারেন। নিয়মিত অল্প পরিমাণে মাখন খাওয়া শিশুদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
মাখন এর দাম
বাজারে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের মাখন রয়েছে। তেমনি এক একটা মাখনের দামও পড়বে এক এক রকম। বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা এই পোস্টের এবারে থাকছে, বাজারে থাকা বিভিন্ন ধরনের মাখন এর দাম সম্পর্কিত তথ্য। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে আসি বর্তমান বাজারের মাখনের মূল্য তালিকা।
বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম বা উপকারিতা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ
প্রশ্ন: মাখন কিভাবে খেতে হয়?
উত্তর:- মাখন বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের রান্নার ক্ষেত্রে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। বিস্কুট দিয়ে, ভাত দিয়ে, পাউরুটি দিয়ে সরাসরি খাওয়া যায়। বিভিন্ন স্যুপের মধ্যে দিয়েও খাওয়া যায়।
প্রশ্ন: শিশুর খাবারে মাখন কিভাবে দিতে হয়?
উত্তর:- শিশুর পছন্দের সব খাবারের সাথে মিশিয়ে দিতে পারেন। সবজি, আয়রন, প্রতি ৪ আউন্স ফল, ফোর্টিফাইড বেবি সিরিয়াল বা মাংসে এক চা চামচ করে মাখন দিতে পারেন।
প্রশ্ন: প্রতিদিন কতটুকু মাখন খাওয়া উচিত?
উত্তর:- প্রতিদিন খাবার জন্য মাখন ১-২ টেবিল চামচের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। মাখনের মধ্যে ক্যালোরি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে, তাই আপনার স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য একই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
প্রশ্ন: মাখন কি বাচ্চাদের জন্য ভালো?
উত্তর:- মাখন শারীরিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শরীরের পেশীকে শক্তিশালী করে কারণ এতে প্রোটিন রয়েছে। উচ্চ ক্যালোরি এবং শক্তি প্রদান করে মাখন এবং A,K,E ও B12 এর মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ধারণ করে।
শেষ কথা: বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম - মাখন খাওয়ার উপকারিতা
আপনি নিশ্চয়ই মাখনের বিস্তারিত তথ্য বাচ্চাদের মাখন খাওয়ার নিয়ম-মাখন খাওয়ার উপকারিতা এই পোস্টটি পড়ে জানতে পেরেছেন। আমাদের মাখন সম্পর্কিত পুরো পোস্টটি সময় নিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যেকোনো বিষয়ে ভালো করে জেনে শুনে সচেতনতার সহিত গ্রহণ করা উচিত। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সবদিকেই সচেতন থাকা উচিত। এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বহুল আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। বাচ্চাদের দিকে খেয়াল রাখুন, নিরাপদে থাকুন। ধন্যবাদ।
সৌমিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url