ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়
তাই চুলের সমস্যাটাকে তুচ্ছ মনে করা উচিত নয়। গুরুত্ব সহকারে চুলের যত্ন নেয়া এবং সমস্যা দেখা দিলে যেটার সমাধান করা উচিত। আমরা আজকের এই আর্টিকেলে জানতে পারবো ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়।
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
আমাদের যদি অস্বাভাবিক চুল পড়া শুরু হয় তাহলে তার দ্রুত সমাধান করা দরকার। অন্যথায় চুল পড়তে পড়তে টাক হয়ে যেতে পারে। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় অতিরিক্ত চুল পড়ে ছেলেদের। চুল পড়তে পড়তে টাক হয়ে যায়।
সঠিক সময়ের সঠিক চুলের যত্ন না নিলে চুল পড়া বেড়ে যায়। এর জন্য যদি আপনার চুল পড়া শুরু হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ এর সমাধান খুঁজে বের করুন এবং চুলের প্রতি যত্নবান হন।
যে কারণেই চুল পড়ুক না কেন সঠিক যত্ন নিলে চুল ঘন হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চুল শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পু করার পূর্বে নারকেল তেল দিয়ে চলে ম্যাসাজ করুন, এবং ম্যাসাজ করার কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন পরিষ্কার করে।
অলিভ অয়েল এবং নারিকেল তেল চুলের গোঁড়ায় পুষ্টি যোগায় এবং চুল পড়া দূর করে এবং চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি নিয়মিত এটি চালু রাখেন তাহলে আপনার চুল পড়া কমবে এবং আপনার নতুন চুল গজাবে।
অয়েল মাসাজের মত ড্রাই ম্যাসাজ ও চুলের জন্য উপকারী। ড্রাই ম্যাসাজ হচ্ছে চুলের একটি ভালো ব্যায়াম। এটি করলে চুলের গুড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া অনেকটা কমে আসে। তাছাড়াও এলোভেরার জেল, পেঁয়াজের রস, নারকেল তেল এবং কালোজিরা, মেথি এসব উপাদানেও বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে যা চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
এ সকল উপাদান দিয়ে আপনি আপনার পছন্দমত হিয়ার মাস তৈরি করে নিতে পারেন। আপনি সপ্তাহে একদিন করে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত আপনি ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। প্রতি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলেই ধীরে ধীরে আপনার চুলের গোঁড়া মজবুত হবে এবং চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে খাবার
ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় - চুলের যত্নের পাশাপাশি নজর দিন আপনার প্রতিদিনের খাবারেও। খাবারের পুষ্টির অভাবেও অনেক সময় অতিরিক্ত চুল পড়ে। ডিম, মাছ, দুধ, দই ও ছানা জাতীয় খাবার রেগুলার আইটেমে রাখুন। নিয়মিত খাবারের সাথে শাকসবজি রাখুন। শাকসবজিতে প্রায় সকল ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায় এবং এটি শরীর এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী।
কমলা, স্ট্রবেরি ও পেয়ারা জাতীয় খাবার চুলের জন্য অনেক উপকারী। ভালো শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তাই আপনি শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করার আগে সেটি যাচাই করে নিবেন।
প্রতিদিন চুলের যত্নের পাশাপাশি খাবারের দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে। খাবারের সাধারণত পুরা তেল থাকে, এতে কোন ভিটামিন থাকে না বরং থাকে ক্ষতিকর পদার্থ। তাই আপনাকে অতিরিক্ত তৈলাক্ত জাতীয় খাবার বর্জন করে দিতে হবে।
প্রতিদিনের খাবারের সাথে শাকসবজি এবং আমি জাতীয় খাবার খেতে হবে। আপনার চুল দেখতে অনেক সুন্দর, কিন্তু তা যদি নিয়মিত পড়তে থাকে তাহলে আপনি আপনার এই সৌন্দর্য হারাবেন।
ছেলেদের চুল ভালো রাখার কয়েকটি উপায় - ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
- চুল যদি অপরিষ্কার থাকে তাহলে চুল পড়া বৃদ্ধি পায়। তাই চুল নিয়মিত পরিষ্কার করুন তৈলাক্ত স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখার জন্য নিয়মিত চুল ধুতে হবে। এবং চুল যাতে বেশিক্ষণ বেঁচে অবস্থায় না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- অনেক সময় দেখা যায় শীতের কারণে বা অন্যান্য কোনো কারণে অনেকে চুলে গরম পানি ব্যবহার করেন বা গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে থাকেন। গরম পানি আমাদের চুলের জন্য ক্ষতিকারক। তাই চুলকে ভালো রাখতে গরম পানি এড়িয়ে চলুন।
- অনেকে আবার রেগুলার conditioner চলে ব্যবহার করেন। অতিরিক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল পড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার না করে, হালকা কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
- মাথা দোয়ার সময় প্রায় সকলেই হাত দিয়ে চুলের গোঁড়ায় জোরে জোরে ম্যাসাজ করেন। চুল পরিষ্কার হওয়ার জন্য। চুল ভেজা অবস্থায় যদি চুলের গোঁড়ায় জোরে জোরে ম্যাসাজ করে থাকেন তাহলে চুল পড়ে যায়। মাথার ত্বক কম স্পর্শ করুন। হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন।
- প্রতিদিন চুলের যত্নের পাশাপাশি খাবারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার বর্জন করতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার প্রতিদিন খেতে হবে। স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলতে হবে।
- আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন অনলাইনে যে কোন প্রোডাক্ট দেখলে সেটি অর্ডার করে ফেলেন। অনলাইনে বেশিরভাগ প্রোডাক্টটি বাজে মানের থাকে। তাই স্টাইলিশ পণ্য অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না।
- অনেকেই আবার প্রতিদিনই চুলে শ্যাম্পু করেন আবার কন্ডিশনার করেন। প্রতিদিন চুল পরিষ্কার করলে চুলের ঘনত্ব যেমন কমে যায় তেমনি চুলের যে এক নিজস্ব তৈলাক্ত থাকে সেটাও কমে যায়। চুল অতিরিক্ত পরিষ্কার করবেন না।
ছেলেদের চুলের গোড়া শক্ত করার উপায় - ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় - চুলের গোঁড়া যদি হয় শক্ত তাহলে চুল সহজে পড়ে যাবে না। এর জন্য পেঁয়াজের রস চুল উৎপাদন ও চুলের গোঁড়া মজবুত করতে বেশ উপকারী ও কার্যকরী। পেঁয়াজের মধ্যে এন্টি ব্যাকটেরিয়া উপাদান রয়েছে। পেঁয়াজের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান এবং সালফারের উপস্থিতি, মাথার রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ বাড়ায়। চুল সহজে পড়ে যায় না।
যার ফলে চুলের গোঁড়া মজবুত হয়। পেঁয়াজের রস, রসুন বাটা ও এক চামচ বাদাম বাটা একত্রে মিশিয়ে চুলের গোঁড়ায় গোঁড়ায় ম্যাসাজ করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। এরপরে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন।
শেষ কথা: ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়
চুল নিয়ে সমস্যায় ভুগেন অনেক পুরুষরাই। সঠিক সময়ে সঠিক যত্ন যদি আপনি না নেন তাহলে চুল পড়া বৃদ্ধি তো পাবেই। আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় বা কিভাবে ছেলেদের চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করা যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে এসেছে।
এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ও ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বেশি করে প্রোটিন জাতীয় খাবার খান, পানি পান করুন, চিন্তা মুক্ত থাকুন। ভালো করে চুল শ্যাম্পু করে ভালো ব্রান্ডের তেল ব্যবহার করুন। সস্তা দামের অহেতুক কোম্পানির তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া আরো বৃদ্ধি পাবে।
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর / FAQ
প্রশ্ন ১: কি ঔষধ খেলে চুল ঘন হয়?
উত্তর:- প্রাথমিকভাবে চুলের বৃদ্ধি এবং পুরুষদের মাথার টাকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় মিনোক্সিডিল (Minoxidil)। এই ওষুধের প্রায় দুই শতাংশ মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যেসব মহিলাদের চুল পাতলা হওয়ার সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে। এছাড়াও মাথার ত্বকের সামনের অংশের চুল পড়া এবং টাক হয়ে যাওয়া মাথায় ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন ২: ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ হবে কিভাবে?
উত্তর:- বিশেষ করে খাদ্য তালিকায় চর্বিযুক্ত, মাছ, মাংস সহ বিভিন্ন প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখুন। এগুলো চুলের স্বাস্থ্য উন্নতি করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। খাদ্যতে প্রোটিন অনেক সময় পরিবর্তন হলে অথবা শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে চুল পড়া শুরু হয়।
প্রশ্ন ৩: চুলের জন্য কোন তেল ভালো হবে?
উত্তর:- চুলের জন্য নারিকেল তেল ভালো। এছাড়াও অর্গান তেল এবং জোজোবা তেলও শুষ্ক চুলে খুব ভালো প্রভাব দেখায়। এই তেল চুলে ব্যবহারের ফলে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং চুল পর্যাপ্ত আদ্রতা পায়। তাছাড়া চুলের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, চুলের উপরিভাগে ময়লা জমে অথবা খুশকির কারণে মাথায় চুলকানি শুরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মাথার অতিরিক্ত খুশকি বা চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে নিমের তেল অথবা টি ট্রি ব্যবহার করতে পারেন।
প্রশ্ন ৪: চুল ঘন ও গজানোর জন্য আমন্ড অয়েল কিভাবে ব্যবহার করবেন?
উত্তর:- আপনি প্রতিদিন আপনার মাথার ত্বক এবং চুলে বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি বিভক্ত প্রান্ত এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে দীর্ঘ এবং চকচকে চুল পেতে সাহায্য করবে। আপনার হাতের আঙ্গুলে করে কিছু পরিমাণ তেল নিয়ে, হালকা ঘষে দিনে কয়েকবার আপনার চুলের ডগায় তেলটি লাগাবেন।
প্রশ্ন ৫: কতদিন পর পর চুলে শ্যাম্পু করা উচিত ?
উত্তর:- চুলে শ্যাম্পু করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিন উল্লেখ করা নেই, তবে সপ্তাহে ৩ দিন শ্যাম্পু করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এবং গরমকালে যদি অতিরিক্ত ঘাম হয় তবে সপ্তাহে ৪ দিন ও শ্যাম্পু করার পরামর্শ দেন। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্র বিশেষে প্রতিদিনই শ্যাম্পু করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
সৌমিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url