সেরা ১১টি চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান

সেরা ১১টি চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান: বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম। পাহাড় ও সমুদ্রে ঘেরা চট্টগ্রাম জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। তাই চট্টগ্রাম জেলাকে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে ডাকা হয়।
চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান
চট্টগ্রাম জেলা দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু স্থান হলো; পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়’স লেক, ওয়ার সিমেট্রি, ভাটিয়ারী লেক, ডিসি হিল, বাটালি হিল, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, চন্দ্রনাথ পাহাড়, বাঁশখালী ইকোপার্ক, জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর, বাঁশখালী চা বাগান, মহামায়া লেক, মহুরি প্রজেক্ট, খৈইয়াছরা ঝরনা, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, পারকি সমুদ্র সৈকত ও সন্দ্বীপ ইত্যাদি।

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান

তো চলুন চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম শহরের ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত। এটি কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। পতেঙ্গা চট্টগ্রাম শহরের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এই সৈকতটি ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে সমুদ্র সৈকতে সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা বেড়ি বাঁধ দেয়া হয়েছে। 

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ঘাটি বিএনএস ঈসা খান পতেঙ্গার সন্নিকটে অবস্থিত। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর এর অনেক জেটি এইখানে অবস্থিত। একটা সময় সমুদ্র সৈকত বলতে শুধু কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বোঝানো হলেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে এই পারকি সমুদ্র সৈকতও। 

চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র এক থেকে দেড় ঘণ্টার পথ দূরত্বে এই সুন্দর সমুদ্র সৈকতটি অবস্থিত। একদিকে ঝাউবনের সবুজের সমারোহ, আরেকদিকে নীলাভ সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশি আপনাকে স্বাগত জানাবে। আর সমুদ্র তীরের মৃদুমন্দ বাতাস আপনার মনকে আনন্দে পরিপূর্ণ করে দেবে নিমেষেই।

একটা সময় এই সমুদ্র সৈকতে যাবার রাস্তাটি খুব উন্নত ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের আনা-গোনা বেড়ে যাওয়াতে কর্তৃপক্ষ রাস্তাটিকে সংস্কার করে ঝকঝকে করে তুলেছে। এছাড়া জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 

সমুদ্র সৈকতের সাথেই ঝাউবনের ছায়াতলে গড়ে উঠেছে খাবারের দোকানসহ অনেক দোকান-পাট। এছাড়া রয়েছে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর জন্য স্পীড-বোট, সমুদ্র তীরেই ঘুড়ে বেরানোর জন্য সী-বাইক আর ঘোড়া। এজন্য অবশ্য আপনাকে নির্দিষ্ট ভাড়া গুনতে হবে ঘণ্টা প্রতি হিসেবে। ঝাউবন ঘেঁষে উত্তর দিক বরাবর হেঁটে গেলে দেখতে পাবেন বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনা।

চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির

চন্দ্রনাথ মন্দির সীতাকুণ্ডুর সেই সৌন্দর্যগুলির মধ্যে অন্যতম যা চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ার উপরে উল্লেখযোগ্য স্থাপনার পাশাপাশি প্রাচীন হিন্দু ধর্মের একটি গল্প নিয়ে বেড়ায়। মন্দিরটি সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি পবিত্র এবং পবিত্র স্থান। তবে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা এটি দেখতে আসে। 

চন্দ্রনাথ পাহাড় এর অবস্থান সীতাকুণ্ড বাজার থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে। চন্দ্রনাথ পাহাড় মীরসরাই রেঞ্জ এর একটি পাহাড় আর এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় চন্দ্রনাথ মন্দির অবস্থিত। এর পাশাপাশি আরো অনেক মন্দির আছে এই এলাকায়। জনশ্রুতি রয়েছে যে, নেপালের এক রাজা ঘুমের মধ্যে পৃথিবীর পাঁচ স্থানে শিবমন্দির স্থাপনের আদেশ পান। 

স্বপ্নে আদেশ পেয়ে নেপালের সেই রাজা পৃথিবীর পাঁচ স্থানে পাঁচটি শিবমন্দির স্থাপন করেন। এগুলো হলো- নেপালের পশুপতি-নাথ, কাশিতে বিশ্বনাথ, পাকিস্তানে ভূতনাথ, মহেশখালীর আদিনাথ এবং সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির। ইতিহাস অনুযায়ী, প্রাচীন নব্য-প্রস্তর যুগে সীতাকুণ্ডে মানুষের বসবাস শুরু হয় বলে ধারনা করা হয়। 

এখান থেকে আবিষ্কৃত প্রস্তর যুগের আসামিয় জনগোষ্ঠীর হাতিয়ার গুলো তারই স্বাক্ষর বহন করে। পরবর্তীতে ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে সুর বংশের শের শাহ্ সুরির নিকট বাংলার সুলতানি বংশের শেষ সুলতান সুলতান গীয়াস উদ্দীন মুহাম্মদ শাহ্ পরাজিত হলে এই এলাকা আরাকান রাজ্যের হাতে চলে যায় এবং আরাকানীদের বংশধররা এই অঞ্চল শাসন করতে থাকেন।

পরবর্তীতে পর্তুগীজরাও আরাকানীদের শাসনকাজে ভাগ বসায় এবং ১৫৩৮ খ্রী: থেকে ১৬৬৬ খ্রী: পর্যন্ত এই অঞ্চল পর্তুগীজ ও আরাকানী বংশধররা একসাথে শাসন করে। প্রায় ১২৮ বছরের রাজত্ব শেষে ১৯৬৬ খ্রী: মুঘল সেনাপতি বুজরুগ উন্মে খান আরাকানীদের এবং পর্তুগীজদের হটিয়ে এই অঞ্চল দখল করে নেন।

মহামায়া লেক

মহামায়া লেক (Mohamaya Lake) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হৃদ যা চট্টগ্রামের মিরসরাই এ অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার। মিরসরাই উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে তোলা। ১১ বর্গ কিলোমিটারের কৃত্রিম লেক নিয়ে গঠিত মহামায়া লেক। 

আপনি যদি এই যায়গায় না যান তবে মনে করবেন আপনার চট্টগ্রাম সফরটাই বৃথা। মহামায়া লেক একটি প্রাকৃতিক লেক বিশাল এলাকা জুড়ে পাহাড়ি লেকের পানি দিয়ে এই এলাকা গঠিত। কায়াকিং (kayaking) এর মজার অভিজ্ঞতা নিতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন মহামায়া লেকের মাঝে ৮ কিলোমিটার। ঘণ্টা প্রতি খরচ হবে মাত্র ৩০০ টাকা। 

ছাত্রদের জন্য এই খরচ আরও কম। মাত্র ২০০ টাকা তবে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দেখাতে হবে। এক কায়াকে চড়া যাবে ২ জন। ৩জনের বোট ঘণ্টা ৪৫০ টাকা এবং আধা ঘণ্টা ৩০০ টাকা। সকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫ঃ৩০ পর্যন্ত কায়াকিং করা যায়। সবার জন্য লাইফ জ্যাকেট থাকবে, তাই যারা সাঁতার পারেন না তারাও কায়াকিং করতে পারবেন।

এছাড়া মহামায়া লেকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য ইঞ্জিন চালিত বোট আছে। মাঝারি মানের ইঞ্জিন চালিত বোটে ঘণ্টা প্রতি ভাড়া পড়বে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। একসাথে ৮-১০ জন উঠতে পারবেন এই বোটে। আর বড় বোটে ঘণ্টা প্রতি ভাড়া পড়বে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। এসব বোটে একসাথে ১৫-২০ জন উঠতে পারবেন।

সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক

চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪০ মিনিটের পথ সীতাকুণ্ড, সেখানেই রয়েছে অসাধারণ এক পর্যটন স্পট। আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। সীতাকুণ্ডে আপনি দেখতে পাবেন দুইটি ঝর্ণা, এদের একটির নাম সহস্র ধারা ঝর্ণা এবং অন্যটি সপ্তধারা ঝর্না। ঝর্না সমূহ আপনার মন ভরিয়ে দিতে সক্ষম। যদিও ঝর্ণার ধারে যেতে হলে আপনাকে পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে উপরে এবং নিচে নেমে যেতে হবে পাড়ি দিতে হবে দুর্গম পথ। 

আপনি যদি এডভেঞ্চার প্রিয় হন তবে অবশ্যই এই সুযোগ লুফে নিতে পারেন। এছাড়াও সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে রয়েছে অসংখ্য দুর্লভ গাছের সমষ্টি যা আপনার বৃক্ষ বিষয়ে ধারণাকে শাণিত করবে, একই সাথে এখানকার উঁচু উঁচু পাহাড় আপনাকে প্রাকৃতিক অনন্য অনুভূতি দিবে।

চট্টগ্রাম শহর হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে এগুতে থাকলে প্রথমে পাহাড়তলী এবং তারপর একে একে কাট্টলী, সিটি তোরন, কুমিরা অতিক্রম করতে করতে পূর্ব পাশে চোখে পড়বে সুউচ্চ পাহাড়ের উপর চন্দ্রনাথ মন্দির, যার পাদদেশে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক। 

ইকোপার্কে প্রবেশের সাথে সাথে আপনি একটি বড় ডিসপ্লে ম্যাপ দেখতে পাবেন, যার মাধ্যমে আপনি ইকোপার্ক সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারনা পাবেন। এ স্থান থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৫ কি.মি., আপনি পায়ে হেঁ‌টে অথবা জীপ, মাইক্রোতে চড়ে সেখানে যেতে পারবেন।

গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত। স্থানীয় মানুষের কাছে এই সৈকত মুরাদপুর বীচ নামে পরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালি সি বীচের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। 

অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালি সী বিচ কে সাজাতে প্রকৃতি কোন কার্পণ্য করেনি। একদিকে দিগন্ত জোড়া সাগর জলরাশি আর অন্য দিকে কেওড়া বন এই সাগর সৈকতকে করেছে অনন্য। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারিদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল লক্ষ করা যায়, এই বন সমুদ্রের অনেকটা ভেতর পর্যন্ত চলে গেছে। 

এখানে পাওয়া যাবে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত পরিবেশ। গুলিয়াখালি সৈকতকে ভিন্নতা দিয়েছে সবুজ গালিচার বিস্তৃত ঘাস। সাগরের পাশে সবুজ ঘাসের উন্মুক্ত প্রান্তর নিশ্চিতভাবেই আপনার চোখ জুড়াবে। বীচের পাশে সবুজ ঘাসের এই মাঠে প্রাকৃতিক ভাবেই জেগে উঠেছে আঁকা বাঁকা নালা। এইসব নালায় জোয়ারের সময় পানি ভরে উঠে। 

চারপাশে সবুজ ঘাস আর তারই মধ্যে ছোট ছোট নালায় পানি পূর্ণ এই দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষজনের আনা গোনা কম বলে আপনি পাবেন নিরিবিলি পরিবেশ। সাগরের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নিরিবিলি পরিবেশের গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত আপনার কাছে ধরা দিবে ভিন্ন ভাবেই।

চাইলে জেলেদের বোটে সমুদ্রে ঘুরে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে বোট ঠিক করতে দরদাম করে করে নিতে হবে। অনেক সুন্দর মাঠ আছে, ফুটবল নিলে টার্ফ এর ফিলিং পাবেন। জেলেদের বোটে করে সমুদ্রেও ঘুরতে পারবেন, ২০০০ টাকাতেই ঘুরে আসা যাবে। ক্যাম্পিং করতে চাইলে তাঁবু নিয়ে গেলে থাকতে পারবেন।

বাশঁবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা বিভিন্ন কারণে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সীতাকুণ্ডে রয়েছে অশেষ নয়নাভিরাম চন্দ্রনাথ পাহাড়, ইকোপার্ক সবুজ বনাঞ্চল বেষ্টিত আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ, পাহাড়ি লেকের মনোরম দৃশ্য। কিছুদিন আগে নতুন একটি পর্যটন স্থান যুক্ত হয়েছে আগের লিস্টে, আর সেটা হলো বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিঃমি উত্তরে একটি ছোট্ট বাজারের নাম বাঁশবাড়িয়া বাজার। এই বাজারের মধ্য দিয়ে সরু পিচ ঢালা পথে মাত্র ১৫ মিনিটে পৌঁছানো যায় বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র উপকুলে। এই সমুদ্র সৈকতের মুল আকর্ষণ হল, প্রায় আধা কিলোমিটারের বেশি আপনি সমুদ্রের ভিতর হেঁটে যেতে পারবেন। 

যদিও সবাই এইটাকে সুমুদ্র বলে কিন্তু গুগল ম্যাপে এটাকে খাল হিসেবে দেখায়। তবে সমুদ্রের মতই বড় বড় ঢেউ আছে। এখানে এসে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ানো যাবে, আহরণ করা যাবে প্রকৃতির শোভা। ঝাউ বাগানের সারি সারি ঝাউ গাছ ও নতুন জেগে উঠা বিশাল বালির মাঠ, সব মিলিয়ে এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য।

চট্টগ্রাম এর অলংকার থেকে সীতাকুণ্ড যাওয়ার যেকোনো বাস বা টেম্পোতে করে বাঁশবাড়িয়া নামতে হবে। ভাড়া ৩০-৪০ টাকা। অলংকার থেকে চট্টগ্রাম হাইওয়ে ধরে ২৩ কিঃমিঃ যেতে হবে। এটা বাড়বকুন্ডের একটু আগে। বাঁশবাড়িয়া নামার পর সিএনজি তে করে আরো ২.৫ কিঃমিঃ গেলে বেড়িবাঁধ পাওয়া যাবে। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ২০টাকা করে।

চাইলে রিজার্ভও নেওয়া যায়। ওখানেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। সিএনজি রিজার্ভ করে নিতে পারেন তাহলে আপনাকে বাঁধের সামনে পর্যন্ত নিয়ে যাবে। রিজার্ভ ভাড়া ৩০০ টাকা নিবে।

কুমিরাঘাট, সীতাকুণ্ড

কুমিরা ঘাট বন্দর নগরী চট্টগ্রামের অন্যতম একটি সুন্দরতম স্থান যার অবস্থান সীতাকুণ্ডের কুমিরার ঘাট ঘরে। সাগরপাড়ে সময় কাটানোর জন্য দারুণ একটা জায়গা এই কুমিরাঘাট। পড়ন্ত বিকেলে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা যায়। এটি মূলত পারাপারের ঘাট তবে এখানে রয়েছে বিশাল দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ। মনে হবে সমুদ্রের মাঝে গিয়ে আরেক প্রান্ত শেষ হয়েছে। 

যেকোনো দিন এই কুমিরা ঘাটঘর ব্রিজে ঘুরে আসা যায়। জোয়ার এবং ভাটার সময় দুই রূপ ধারণ করে এই স্থানের প্রাকৃতিক রূপ। কুমিরা ঘাটের বিকেলটা বেশ দারুণ। এখানে সূর্যোদয়ের দৃশ্য বেশ উপভোগ্য। সমুদ্রের গর্জন সেই সাথে সাগরের শীতল হাওয়া গায়ে দোলা দিয়ে যায়। জোয়ারের সময় ব্রিজের শেষ মাথায় দাঁড়ালে মনে হবে যেন সমুদ্রের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন।

কুমিরা ঘাটের এই ব্রিজের একদম শেষ মাথা থেকে বোট পাওয়া যায় যা দিয়ে আপনি ঘুরে আসতে পারেন মাঝ সমুদ্র থেকে। জনপ্রতি ভাড়া নিবে ২০টাকা। সন্দ্বীপ যাওয়ার অন্যতম একটি রুট হলো এই ব্রিজ। বেশির ভাগ মানুষ সন্দ্বীপ যাওয়ার এই পথটাকেই বেছে নেন। জোয়ার এর সময় গেলে মনে হবে ব্রিজের উপর দিয়ে সমুদ্রের বুকে হাঁটছেন।

কুমিরা ঘাট থেকে জনপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকা ভাড়ায় স্পিডবোটে ৩০ মিনিটেই সন্দ্বীপ চ্যানেল পার হয়ে সন্দ্বীপ যাওয়া যায়। যখন সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে শিপিং ইয়ার্ডের সোডিয়াম লাইটগুলো জ্বলে উঠে তখন দারুণ লাগে। যারা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এবং মিরের সরাইয়ের দিকে ঘুরতে যাবেন তারা বিভিন্ন ট্রেইল এর পাশাপাশি সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়, ইকো-পার্ক, বাশবাড়িয়া, গুলিয়াখালী ঘুরে কুমিরাঘাটে যেতে পারেন।

আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ

চট্টগ্রাম শহরে মোগল স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত আন্দরকিল্লা জামে মসজিদটি সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩০ ফুট ওপরে পাহাড়চূড়ায় । ১৬৬৬ সালের ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মোগলদের অধিকারে আসে। এর এক বছর পর মসজিদটি নির্মিত হয়। মসজিদের মূল ফটকের পর সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠলে চোখে পড়বে অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্যে গড়া মসজিদের মূল ভবন। 

যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভারতবর্ষের মোগল শাসকদের অন্যতম গর্বের ইতিহাস—চট্টগ্রাম বিজয়ের ঘটনা। এটি সাড়ে তিন শতাব্দীর পুরনো আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ। দিল্লির শাহি জামে মসজিদের অনুকরণে তৈরি চট্টগ্রাম শহরের এই মসজিদে মূল ইমারতের প্রবেশপথে কালো পাথরের গায়ে খোদাই করে সাদা অক্ষরে ফারসি ভাষায় শিলালিপি রয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়া থেকে জানা যায়, শিলালিপিতে বাংলার সুবাদার শায়েস্তা খান এটি ১৬৬৭ খ্রিষ্টাব্দে নির্মাণ করেন বলে উল্লেখ আছে। যদিও ধারণা করা হয়, এ মসজিদের প্রকৃত নির্মাতা শায়েস্তা খানের বড় ছেলে ও চট্টগ্রাম বিজেতা উমেদ খান। তবে তাঁর নাম ওই শিলালিপিতে উল্লেখ নেই।

চেরাগী পাহাড়

কিংবদন্তি আছে, বদর শাহ নামের একজন পীর প্রথম চেরাগ জ্বালিয়ে দেও, দৈত্যদানোয় ভরা এই শহর থেকে দূর করেছিলেন অশুভ আত্মা। আর যে পাহাড়ের ওপর তিনি চেরাগ জ্বালিয়েছিলেন তার নাম হয়েছিল চেরাগী পাহাড়। তবে কেউ যদি এই গল্প শুনে চেরাগী পাহাড় খুঁজতে বের হন তিনি হতাশই হবেন। কেননা ওখানে কোনো পাহাড়ই নেই, শুধু সারি সারি দালান। ‘চেরাগী পাহাড়’ -এর মতো চট্টগ্রাম নগরের আরও বহু এলাকার সঙ্গে পাহাড় নামটি থাকলেও বাস্তবে সেখানে এখন পাহাড়ের ছিটেফোঁটাও নেই।

মানুষ কথায় বলে- বাতির নীচে অন্ধকার তাই আমরা চেরাগের আলো থাকার পরও চেরাগী পাহাড়কে চিনিনা-জানিনা, তবে এখন সেই সবুজ অরণ্য ভরা উঁচু পাহাড় নেই, আছে শুধু কৃত্রিমভাবে বানানো একটি চেরাগ- এই চেরাগ কিন্তু আলাউদ্দিনের সেই অলৌকিক চেরাগ নয়।

প্রাচ্যরাণী চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে চেরাগী পাহাড়ের প্রাচীন ইতিহাস জড়িত। ‘চেরাগী পাহাড়’ এর ইতিহাস ঐতিহ্য আজ হারাতে বসেছে। 

প্রতিদিন শত শত সংবাদ ও সংস্কৃতি কর্মীদের মিলনক্ষেত্রে পরিণত হলেও তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যে রক্ষার বিষয়ে সবাই কেন যেন নীরব। পত্রিকা ও ডাক্তার পাড়া নামে খ্যাতি অর্জন করলেও এই চেরাগী পাহাড়ের একটি গৌরব গাথা ইতিহাস রয়েছে, সেই ইতিহাসকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হলে চেরাগী পাহাড়ের পাহাড়ি রূপ পর্যালোচনা করার দরকার।

কথিত আছে , সুদূরে অতীতে আরব দেশ থেকে ইসলাম প্রচার করার উদ্দেশ্যে বদর শাহ নামক একজন সুফি সাধক ভাসমান একখণ্ড পাথরের উপর আরোহণ করে পূর্ব দেশে রওনা হন। তারপর একদিন পাথর খণ্ডটি বদর শাহকে নিয়ে কর্ণফুলী নদীতে প্রবেশ করে এবং নদীর যে স্থানে পাথরটি থেমে যায় সেইস্থানে তিনি নেমে যান।

ছাগল কান্দা ঝরনা

ছাগল কান্দা ঝর্ণা এর ট্রেইল মোটামুটি অপরিচিত একটা ট্রেইল। অসাধারণ এই ট্রেইলে বড় কমলদহ ঝর্ণা আছে। বড় কমলদহ ঝর্ণার Upstream এ আবার আছে ৪-৫ টা বড় এবং মাঝারি ঝর্না। এদের মধ্যে অন্যতম হল ছাগল কান্দা ঝর্ণা। বড় দারোগার হাট থেকে মহা সড়ক ধরে উত্তর দিকে ( ঢাকার দিকে) আসলে প্রথমে একটি ইট খোলা পরবে। 

ইট খোলা পার হয়ে হাতের ডানের প্রথম মাটির রাস্তা ধরে যেতে হবে । রাস্তা ধরে কিছু দূর গিয়ে ঝিরিতে নেমে ঝিরি ধরে ২০ মিনিটের মত গেলে ঝিরি মুখে পড়বে কমলদহ ঝর্ণা। মূলত এটি একটি ক্যাসকেড। ছাগল কান্দা ঝর্ণার আরেক নাম কমলক ঝর্ণা।

নজরুল স্কয়ার

ডিসি হিল বা ডিসির পাহাড় চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত অন্যতম নান্দনিক স্থান যার বর্তমান আনুষ্ঠানিক নাম নজরুল স্কয়ার। এই পাহাড়ের শীর্ষে চট্টগ্রাম জেলা কমিশনারের (ডিসি) সরকারী বাসভবন অবস্থিত। পাহাড়টির চারিদিকে অনেক সুউচ্চ গাছ রয়েছে। 

প্রতিবছর বাংলা নববর্ষে এখানে বাঙালির জাতীয় উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার মধ্য দিয়ে ডিসি হিল ঐতিহাসিক গুরুত্ব ধারণ করেছে। এছাড়াও এখানে জাতীয় এবং সাংস্কৃতিক দিবসসমূহ পালন, মঞ্চনাটক, উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে। ইংরেজ শাসনামলের গোড়ার দিকে এখানে চাকমা রাজার বাড়ি ছিল। 

পরবর্তীতে এখানে চট্টগ্রামের জেলা কমিশনারের (ডিসি) বাংলো স্থাপিত হওয়ায় কালক্রমে এই পাহাড় ডিসি হিল নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর জীবন-দশায় এখানে প্রায়ই আসতেন অবসর কাটাতে। প্রথম দিকে প্রত্যেক সংগঠন থেকে দুইজন করে নিয়ে একটি স্কোয়াড গঠন করা হত। সেই স্কোয়াডই সম্মিলিত সঙ্গীত পরিবেশন করতো।

১৯৮০ সাল থেকে সংগঠনগুলো আলাদাভাবে গান পরিবেশন শুরু করে। পরে গ্রুপ থিয়েটার সমন্বয় পরিষদ যুক্ত হওয়ার পর অনুষ্ঠানে নাটকও যুক্ত হয়েছ।

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানে কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে গেলে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে (ভাড়া মান ভেদে ৪০০-১২০০টাকা) সীতাকুণ্ড এর বড় দারোগারহাট বাজারে নামতে হবে। এছাড়া ট্রেনে ফেনী বা চট্টগ্রাম নেমে আসতে পারবেন। চট্টগ্রামের শুভপুর বা অলংকার থেকে বাসে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই যেতে পারবেন।

চট্টগ্রাম (কদমতলী শুভপুর ষ্টেশন) থেকে চয়েসে যেতে পারেন, ভাড়া ৮০ টাকা অন্য উপায়েও যাওয়া যায় মিনিবাসে করে। বড় দারোগার হাট থেকে লেগুনাতে ইট ভাটার পর্যন্ত। এর পরের রাস্তা দিয়ে পূর্ব দিকে ২০-২৫ মিনিটের হাটা পথ। প্রথমেই দেখা মিলবে কমলদহ ঝর্ণার।  বাকি পথ ছড়া ধরে গেলেই দেখা মিলবে ছাগল কান্দা ঝর্ণার।

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানে কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রামের মিরসরাইতে থাকার জন্য ভালো কোন আবাসিক হোটেল নেই, তাই আপনাকে সীতাকুণ্ডে থাকতে হবে। যদিও সীতাকুণ্ডতেও তেমন ভালো মানের আবাসিক হোটেল নেই। বাজারের ভিতরে কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে। যেমন- হোটেল সাইমুন, ভাড়া ৩০০-৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ ০১৮২৭৩৩৪০৮২, ০১৮২৫১২৮৭৬৭।

সরকারী প্রতিষ্ঠানের ডাকবাংলো আছে। এছাড়া বারৈয়ারহাট ও থাকতে পারবেন। গোল্ডেন নামে একটি আবাসিক হোটেল ও জাহেদ নামে একটি বোর্ডিং আবাসিক আছে। একটু ভাল মানে থাকতে চাইলে ভাটিয়ারী থাকতে পারবেন। এখানে দুইটি আবাসিক হোটেল আছে। সিঙ্গেল রুম এর ভাড়া পড়বে নন এসি ৬০০ টাকা। দুই বিছানার এসি রুম ১২০০ টাকা।

খাওয়া-দাওয়া

চট্টগ্রাম শহরে বাংলা চাইনিজ ফাস্টফুডসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। আপনি যেকোনো রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে পারেন। চট্টগ্রামে জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে মেজবান এবং কালা ভুনা খাবার খুবই বিখ্যাত। 

শেষ কথা:  চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান

চট্টগ্রামে আরো অনেক ছোটখাটো দর্শনীয় স্থান রয়েছে। আপনি চাইলে যাওয়া আসার পথে সেই স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারেন। এতক্ষণ আমরা চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন । 

তাছাড়াও চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা সর্বক্ষণ আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত।

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর / FAQ

প্রশ্ন ১: চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলো কি কি? 

উত্তর:- চট্টগ্রামের কিছু ঐতিহাসিক স্থান হচ্ছে - 

কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, গুপ্ত জমিদার বাড়ি, চট্টগ্রাম সেনানিবাস, চাকমা রাজবাড়ী, ইউরোপিয়ান ক্লাব, চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি, পার্বতী চরণ দিঘি সহ আরো বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে চট্টগ্রামে। 

প্রশ্ন ২: বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি? 

উত্তর:- বাংলাদেশের সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে কয়েকটি জায়গা হচ্ছে - রাঙ্গামাটি, সুন্দরবন, চট্টগ্রাম হিল ট্রাক্টস,শ্রীমঙ্গল, পাহাড়পুর, সিলেট, কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সেন্ট মার্টিন, গৌড় এগুলো সহ আরো কিছু সুন্দর দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে কয়েকটি। 

প্রশ্ন ৩: পার্বত্য চট্টগ্রাম মানে কি? 

উত্তর:- বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের একটি এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম। যা তিনটি জেলা, যেমন রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি নিয়ে গঠিত। পাহাড় ও উপত্যকায় পূর্ণ বলে চট্টগ্রাম বিভাগের এই এলাকা এর নামকরণ করা হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই পুরো অঞ্চল জুড়ে রয়েছে দেশের মোট বনভূমির এক বিশাল অংশ। 

প্রশ্ন ৪: পর্যটন শব্দের অর্থ কি? 

উত্তর:- পর্যটন এক ধরনের অবসর, বিনোদন বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে স্থান থেকে অন্য স্থানে অথবা এক দেশ হতে অন্য দেশে ভ্রমণ করাকে বুঝায়। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটন শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সৌমিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url