চুল সোজা করার ৫টি ঘরোয়া উপায়

চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায়: ঝলমলে সোজা চুল কার না ভালো লাগে! তাছাড়া নারীর অন্যরকম সৌন্দর্য প্রকাশ পায় তো চুলেই। আমরা অনেক মেয়েরাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল নিয়ে অনেক ডিজাইন করতে পছন্দ করি। অনেকে আবার মনে মনে বলিও আমার চুলটা যদি এরকম ঝলমলে স্ট্রেট হতো, তবে কতই না সুন্দর লাগতো।
চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায়
কিন্তু মনের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে পার্লারে গিয়ে চুল সোজা করতে পারেন না। তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল, চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায়। এই উপায় গুলো ফলো করে আপনি ঘরে বসেই আপনার এলোমেলো, কোঁকড়ানো চুলকে সহজেই সোজা করতে পারবেন।

এই ঘরোয়া উপায় গুলো ফলো করে কোন ক্ষতিকর কেমিক্যাল ছাড়া এবং কোনরকম অর্থ খরচ ছাড়াই ঘরে বসে খুব সহজেই চুল স্ট্রেট করে নিতে পারবেন। তো চলুন দেরি না করে সেরকমই কিছু, চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে আসি।

চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায়

১. অ্যালোভেরা জেল

আপনার রূপচর্চার ক্ষেত্রে অথবা যেকোনো কাজেই অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। চুলের ক্ষেত্রেও খুবই কার্যকরী একটি উপাদান অ্যালোভেরা জেল। কোঁকড়ানো চুলকে সোজা করতে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে অ্যালোভেরা জেল। 

মিশ্রণ পদ্ধতি

হালকা গরম অলিভ অয়েলের সাথে আধা কাপ অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে নিবেন। এর মধ্যে কয়েক ফোঁটা রোজমেরি ও চন্দন তেল মিশে নিবেন। এবং পেস্টটি ভালো করে মিশিয়ে চুলে ভালো করে লাগিয়ে রাখবেন ২ ঘণ্টার জন্য। পরে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। চুলের মধ্যে বেশি ঘষাঘষি করবেন না। এতে করে চুল ভেঙ্গে যায় এবং রুক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২. নারকেলের দুধ ও লেবুর রস

বিশেষ করে চুলকে নরম রাখার জন্য নারিকেলের দুধ খুবই উপকারী। এবং লেবুর রস যেমন ত্বকের জন্য তেমনি চুলের জন্য খুবই কার্যকরী। নারিকেলের দুধ ও লেবুর রস চুলের জন্য খুবই ভালো একটি মিশ্রণ। 

মিশ্রণ পদ্ধতি

একটি পাত্রে একটি পাতিলেবুর রস নিবেন এবং পাতিলেবুর রসের মধ্যে দুই চামচ নারিকেলের দুধ মিশিয়ে নিবেন। পেস্টটি ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে, আলতোভাবে পুরো চুলে লাগিয়ে নিবেন। আধাঘণ্টা পর চুলে হালকা শ্যাম্পু করে নিবেন।

৩. কলা

চুলকে নরম, সিল্কি, সোজা করতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কলা। কলা নিয়মিত ব্যবহারের ফলে রুক্ষ চুলকে ঝলমলে, সিল্কি ও সোজা করে নিতে পারে। 

মিশ্রণ পদ্ধতি

একটি বাটিতে দুইটি কলা নিবেন। কলা গুলোকে ভালো করে পেস্ট করে তাতে ২ চামচ মধু, ১ চামচ দই এবং সামান্য পরিমাণে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিবেন। এবার সবগুলো উপাদান ভালো করে একসাথে পেস্ট করে নিবেন। পেস্ট করা হয়ে গেলে আলতোভাবে পুরো চুলে লাগিয়ে নিবেন। চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে নিবেন।

৪. ডিম ও অলিভ অয়েল

চুলের জন্য খুবই ভালো কার্যকরী উপাদান এই দুইটি, ডিম ও অলিভ অয়েল। ডিমের মধ্যে থাকা প্রোটিন চুলের ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এবং অলিভ অয়েল কোঁকড়ানো বা ঢেউ ঢেউ চুলকে করে তুলে সোজা ও প্রাণবন্ত। 

মিশ্রণ পদ্ধতি

একটি বাটিতে দুইটি ডিম নিবেন। ডিমগুলো ভালোভাবে ফেটিয়ে নিবেন। অন্য একটি বাটিতে আপনার চুলে কতটুকু তেল লাগে সেই পরিমাণ অনুযায়ী অলিভ অয়েল নিবেন। সেই অলিভ অয়েলের মধ্যে ফেটানো দুইটি ডিম ভালোভাবে মিশ্রিত করে নিবেন। ভালোভাবে মিশ্রণ হয়ে গেলে সেই পেস্টটি আলতোভাবে চুলে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল শ্যাম্পু করে নিবেন।

৫. মধু ও দুধ

দুধের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন যা চুলের জন্য খুবই উপকারী এবং দুধ চুলকে সোজা রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়াও মধু ও দুধ একসাথে চুলকে খুবই মজবুত করে এবং খুবই সিল্কিও সফট রাখে। 

মিশ্রণ পদ্ধতি

একটি বাটিতে এক চা চামচ মধু নিন। এবং এক চা চামচ মধুর সঙ্গে চার টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে নিন। এবারে এ দুটি উপাদানকে ভালো করে মিশিয়ে নিন। 

এই মিশ্রণটি আপনি ব্যবহার করবেন চুলে শ্যাম্পু করার পর। শ্যাম্পু করার পরে পুরো চুলে এই মিশ্রণটি স্প্রে করে নিন। ২-৩ মিনিট রেখে, চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

শেষ কথা: চুল সোজা করার ৫টি ঘরোয়া উপায়

পার্লারে গিয়ে অযথা টাকা খরচ না করে, ঘরে বসেই আপনি খুব সহজে আপনার কোঁকড়ানো ঢেউ ঢেউ চুল সোজা করে নিতে পারেন। আমাদের এই চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায় ফলো করে। এ রকম প্রয়োজনীয় সহজ সহজ টিপস পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। 

এবং অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি আমাদের শরীরের ত্বকের ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। চুলেই নারীর সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। চুলের প্রতি যত্নশীল হন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

চুল সোজা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর / FAQ

প্রশ্ন ১: কিভাবে প্রাকৃতিকভাবে চুল সোজা করবেন? 
উত্তর:- হালকা গরম তেলের মাসাজ খুব ভালো কাজ করে চুলের জন্য। ক্যাস্টর অয়েল এবং নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে তা গরম করে নিয়মিত স্ক্যাল্পে ও সম্পূর্ণ চুলে মাসাজ করতে পারেন। এতে করে চুল ধীরে ধীরে সোজা হতে শুরু করবে। তেলটি চুলে মাসাজ করার পর কমপক্ষে ৩০ মিনিট সময় একটি টাওয়াল দিয়ে পেঁচিয়ে রাখবেন চুল। 

প্রশ্ন ২: সোজা চুলের জন্য কোন মাস্ক ভালো? 
উত্তর:- চুলকে সোজা করতে কয়েকটি মাস্কই কার্যকরী। তার মধ্যে একটি যেমন,কলা ও মধু। একটি পাত্রে কলা নিয়ে কাটা চামচের সাহায্যে তা ম্যাশ করুন। সামান্য মধু, জলপাই ও তেল কলার ম্যাশে যোগ করুন। সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ভালো একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্টটি ৩০ মিনিটের জন্য চুলে ব্যবহার করবেন। এই পেস্টটি প্রয়োগের ফলে আপনার চুল ধীরে ধীরে সোজা হতে শুরু করবে। 

৩. হেয়ার মাস্ক ও কন্ডিশনার কি একই?
উত্তর:- চুলকে ময়েশ্চারাইজ করার ক্ষেত্রে হেয়ার মাস্ক কন্ডিশনার এর চেয়ে ভালো কাজ করে। হেয়ার মাস্ক প্রতিকার মূল চিকিৎসা যা চুলের খাদের গভীরভাবে প্রবেশ করতে পারে এবং চুলের সমস্যার সমাধান করতে পারে। কিন্তু কন্ডিশনার মুখোশের কাজ সম্পাদন করতে পারে না। বিশেষ করে যখন আপনার চুল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শুষ্ক হয়ে যায়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সৌমিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url